বিএনপি নেতা আব্দুল কাদের টুকু বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। তার রাজনীতির যাত্রা শুরু হয় বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের সঙ্গে। তিনি ক্রমে বিএনপির কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তার রাজনৈতিক জীবনের প্রধান অবদানগুলোর মধ্যে রয়েছে স্থানীয় ও জাতীয় রাজনীতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করা। তবে গত ১৫ বছরে তার রাজনৈতিক জীবন নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে।
বিএনপি নেতা আব্দুল কাদের টুকু দেশে ফিরে গণমাধ্যমের সামনে একটি বক্তব্য দিয়েছেন, যেখানে তিনি তার অনুভূতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। তার বক্তব্যে তিনি দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকার কষ্টের কথা উল্লেখ করেন এবং বলেন, “আমি সবসময় দেশের প্রতি আমার দায়িত্ব অনুভব করেছি। আজ এখানে দাঁড়িয়ে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য আমি আবারও সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশ নেব।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল, তবে আমি বিশ্বাস করি, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হই এবং সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকি, তাহলে আমরা অবশ্যই পরিবর্তন আনতে পারব।”
টুকু তার দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণ সম্পর্কে কিছুটা আলোকপাত করেন, যেখানে তিনি বলেন, “আমার অনুপস্থিতি রাজনৈতিক কারণে ছিল, তবে আমি সবসময় দেশের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। এখন সময় এসেছে আমার অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান দেশের কল্যাণে কাজে লাগানোর।”
সিরাজগঞ্জের মানুষ এবং বিএনপির কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আপনারা আমার পাশে থেকেছেন, আপনাদের সমর্থন আমাকে নতুন উদ্যম দিয়েছে। এখন আমি জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য আরো শক্তভাবে কাজ করব।”
টুকুর জন্ম সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলায়, তার পিতা ছিলেন একজন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি এবং গ্রামের সমাজসেবক। টুকুর রাজনীতিতে প্রবেশের পেছনে তার পিতার সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব ছিল উল্লেখযোগ্য।
২০০৯ সালে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবর্তন আসার পর থেকে টুকু নানা কারণে আলোচনায় আসেন। তিনি একাধিকবার গ্রেফতার হন এবং বিভিন্ন মামলার সম্মুখীন হন। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ সময় দেশের বাইরে থাকতে হয় তাকে। বিশেষ করে ২০১৩ সালের পর থেকে তিনি বেশ কিছু সময় আত্মগোপনে ছিলেন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা এড়াতে তাকে বিভিন্ন দেশে যেতে হয়েছে।
তার রাজনৈতিক জীবন মূলত বিএনপির উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে যুক্ত ছিল, কিন্তু বিগত ১৫ বছরে দলের ভেতরে বিভাজন ও দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে টুকুর অবস্থান কিছুটা পরিবর্তিত হয়। সাম্প্রতিককালে তিনি দেশের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে ফিরছেন এবং বিশেষ করে সিরাজগঞ্জে তার প্রভাব শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন।
দেশে ফিরে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হওয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন এবং ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালীভাবে বিএনপির জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।